স্বদেশ ডেস্ক:
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন সপ্তম বারের জন্য পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করতে চলেছেন বলে বার বার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রশাসন। আশঙ্কা সত্যি হলে উত্তর কোরিয়ার সাধারণ মানুষের বিপদ আরো বাড়বে বলেই ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
২০০৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে মাটির নিচের গোপন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র থেকে কমপক্ষে ছয় বার পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এ দাবিই এত দিন করে আসছে। এবার দক্ষিণ কোরিয়ার একটি মানবাধিকার সংস্থা দাবি করেছে, ওই পরীক্ষাগুলোর ফলে উত্তর কোরিয়ার পাংগেই-রি পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও তার আশপাশের ভূগর্ভস্থ পানিতে বিপুল পরিমাণ তেজস্ত্রিয় পদার্থ ছড়িয়েছে। যার ফলে উত্তর কোরিয়ার কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের জীবন সঙ্কটে।
’ট্রানজিশনাল জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ’ নামের ওই মানবাধিকার সংস্থা দাবি করছে যে, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ভয় রয়েছে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার বাসিন্দাদেরও। যার অন্যতম কারণ উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী ওই দেশগুলোতে কাঁটা তার পেরিয়ে চোরাপথে মাছ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের কাঁচা সবজি নিয়মিত পাচার করা হয়।
উত্তর কোরিয়ার উত্তর হামজিয়োং প্রদেশে অবস্থিত পাংগেই-রি গবেষণা কেন্দ্র। এর আশপাশে উত্তর কোরিয়ার আটটি শহর রয়েছে, যার বাসিন্দারা নিয়মিত খাওয়া ও রান্নার জন্য ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে। শুধু উত্তর কোরিয়ার শহরই নয়, ওই পরমাণু কেন্দ্রের আশপাশে রয়েছে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অন্য দেশের কিছু শহরও। বিভিন্ন বিজ্ঞানী, পরমাণু গবেষক ও পরিবেশবিদদের গবেষণার ফলাফলের কথা নিজেদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ওই মানবাধিকার সংস্থা।
সংস্থার প্রধান হুবার্ট ইয়ং-হন লি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘শুধু নিজেদের দেশই নয়, উত্তর কোরিয়ার ওই পরমাণু পরীক্ষার ফলে আশপাশের অন্য কয়েকটি দেশের বাসিন্দাদের জীবনও এখন ঝুঁকির মুখে।’
উত্তর কোরিয়ার সরকার অবশ্য সাথে সাথেই ওই প্রতিবেদনের দাবি খারিজ করে দিয়েছে। পিয়ংইয়্যাংয়ের দাবি, তাদের দেশের কোনো এলাকার ভূগর্ভস্থ পানি তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অথচ সংবাদমাধ্যমের কাছে এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারেনি তারা।
তবে প্রতিবেদন দেখে নড়েচড়ে বসেছে চীন ও জাপানের মতো দেশ। তারা তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ওপরে পরীক্ষা ও নজরদারির গতি বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে। এর আগে, ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছিল যে উত্তর কোরিয়া থেকে চীন হয়ে ঘুরপথে যে মাশরুম তাদের দেশের বাজারে আসে, তাতে স্বাভাবিকের তুলনায় নয়গুণ বেশি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের অস্তিত্ব মিলেছে।
সূত্র : আনন্দবাজার